অবৈধপথে দ্রব্যমূল্য বাড়ালে ইসলামে শাস্তি
1 min readইসলামের দৃষ্টিতে দ্রব্যমূল্য বাজারে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় চাহিদা ও জোগানের আলোকে নির্ধারিত হবে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ক্রয়-বিক্রয়ে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা, বাজার নিয়ন্ত্রণ ও মজুতদারি সম্পর্কে ইসলামি দৃষ্টিকোণ রয়েছে। খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীরা অস্বাভাবিকভাবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি করতে পারে না। যদি এমনটি কেউ করে, তবে ইসলামের দৃষ্টিতে আত্মসাৎকারী হিসেবে সাব্যস্ত হবে।
যখন অসাধু ব্যবসায়ীরা অবৈধপথে সংকট সৃষ্টি করে দ্রব্যমূল্যস্ফীতি ঘটাতে চায়, তখন ইসলামি আইনবিদ বা ফকিহদের মতে, সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও নির্ধারণে হস্তক্ষেপ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে ভোক্তা ও উৎপাদক কোনো শ্রেণিরই ক্ষতিসাধন করা যাবে না, উভয় শ্রেণির স্বার্থ সংরক্ষণ করতে হবে। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘ব্যবসায়ী যদি সীমাতিরিক্ত মূল্য গ্রহণ করে এ সুযোগে যে ক্রেতা পণ্যের প্রকৃত মূল্য জানে না, তাহলে এই অতিরিক্ত পরিমাণের মূল্য সুদ পর্যায়ে গণ্য হবে।’
মহানবি (স.) বলেন, ‘কেউ যদি খাদ্য গুদামজাত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে, আল্লাহ তাকে দুরারোগ্য ব্যাধি ও দারিদ্র্য দ্বারা শাস্তি দেন।’(ইবনে মাজাহ: ২২৩৮) আরেক হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ৪০ দিনের খাবার মজুত রাখে, সে আল্লাহ-প্রদত্ত নিরাপত্তা থেকে বেরিয়ে যায়।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা: ২০৩৯৬)
ভোক্তাদের জিম্মি করে বিত্তশালী হওয়ার মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই; বরং ক্ষতি আর ক্ষতি। অবৈধ উপার্জন একদিকে জাহান্নামে যাওয়ার কারণ, অন্যদিকে দুনিয়ার জীবনও অভিশপ্ত হবে। উপরন্তু উপার্জন হারাম হওয়ায় তার নামাজ, রোজা, হজসহ কোনো নেক আমলই কবুল হবে না। আল্লাহ তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে যান। তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন।
অন্যদিকে, মজুতদারি না করে স্বাভাবিক ব্যবসা করলে, তা পরিণত হবে ইবাদতে। হালাল ব্যবসা থেকে উপার্জনে বরকত রয়েছে এবং অপ্রত্যাশিত রিজিক দেওয়া হয় তাকে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘খাঁটি ব্যবসায়ী রিজিকপ্রাপ্ত হয়, আর পণ্য মজুতকারী অভিশপ্ত হয়।’(ইবনে মাজাহ: ২-৭২৮)
হাশরের ময়দানেও হালাল ব্যবসায়ীকে পুরস্কৃত করা হবে; নবিগণের সঙ্গী হওয়ার পরম সৌভাগ্য লাভ করবেন। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন— সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ীদের হাশর নবি, সিদ্দিক ও শহীদগণের সঙ্গে হবে। (তিরমিজি: ৩/৫১৫)