সংবাদ প্রতিদিন বিডি

সংবাদ প্রতিদিন বিডি

ডেঙ্গু সংক্রমণ পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে

1 min read

সারাদেশে শহর থেকে গ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। এমন পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হচ্ছে। এ বছর অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সংক্রমণের গ্রাফ কেবল ঊর্ধ্বমুখী। এখনই সম্মিলিতভাবে ব্যবস্থা না নিলে আরও অবনতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) এক দিনে সর্বোচ্চ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৬৪ জন রোগী। এদিন ডেঙ্গুজ্বর নিয়ে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের নিয়মিত ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩০৪ জনে। আর চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ১০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে নতুন ভর্তি হওয়াদের মধ্যে ৫৬৫ জন ঢাকার বাসিন্দা। ঢাকার বাইরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৯৯ জন। এ নিয়ে বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ৩ হাজার ৩০৪ জন ভর্তি রয়েছেন।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৭ হাজার ৮০২ জন।এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ২৪ হাজার ৩৯২ জন।

ঢাকায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা সর্বমোট ২০ হাজার ৬৩ জন এবং ঢাকার বাইরে সারাদেশে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সর্বমোট সাত হাজার ৭৩৯ জন।

ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় ১২ শয্যা বরাদ্দ ছিল শিশু হাসপাতালে। রোগী বেড়ে যাওয়ায় সেপ্টেম্বর মাসে তা বাড়িয়ে ৫০ শয্যা করা হয়। হাসপাতালটিতে গঠন করা হয় ডেঙ্গু সেল।

বর্তমানে শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে ৭ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছেন। দু-তিন মাসের শিশু থেকে শুরু বিভিন্ন বয়সের ডেঙ্গু রোগী এ প্রতিষ্ঠানে ভর্তি রয়েছেন। অবস্থা বেগতিক দেখে এখন যেখানে খালি পাচ্ছেন, সেখানেই রোগী রাখা হচ্ছে।

শিশু হাসপাতাল এবং ইনস্টিটিউটের ডেঙ্গু সেলের ইনচার্জ ডা. ফারহানা আহমেদ জানান, ডেঙ্গু রোগী আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। যারা দ্বিতীয়বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে তাদের ঝুঁকি বেশি বলে মনে করেন তিনি। এদের মধ্যে অনেককে আইসিইউতে পর্যন্ত ভর্তি করতে হচ্ছে।

তবে ভয়ের বিষয় এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে কিছু নতুন উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।

মুগদা হাসপাতালের পরিচালক ডা. নিয়াতুজ্জামান বলছেন, এসব নতুন উপসর্গের কারণে অনেক রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, তা ঠিক বুঝতে না পেরে হাসপাতালে আসতে দেরি করেছেন। যার কারণে চিকিৎসা বিলম্বিত হওয়ায় তাদের অবস্থা জটিল হয়ে পড়ছে। উপসর্গ দেখে মনে হচ্ছে- ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, মাথাব্যথার মতো।

মুগদা জেনারেল হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৮ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন এবং সর্বমোট ১৪০ জন রোগী বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

এ অবস্থা শিশু হাসপাতাল বা মুগদা জেনারেল হাসপাতালে হলেও চিত্র সারাদেশের। সোমবার (১৭ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণবিষয়ক এক সভায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ডা. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার এমনটাই আভাস দেন। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মশা নিরোধ ও ডেঙ্গুর হটস্পটে অভিযান চালানোর আহ্বান জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *