সংবাদ প্রতিদিন বিডি

সংবাদ প্রতিদিন বিডি

নির্বাচন কমিশন গঠন সংলাপে সময় নষ্ট, বলছে বিএনপি

1 min read

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে শুরু হওয়া সংলাপে অংশ নেওয়াকে বিএনপি সময় নষ্ট বলে মনে করছে। তাই এই সংলাপে না গিয়ে বরং সরকার পতনের আন্দোলনে মনোযোগ দেওয়াকেই যুক্তিযুক্ত বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। নির্বাচন কমিশন আগের মতো সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠন হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এই রাজনৈতিক পটভূমিতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসি গঠনের সংলাপে অংশ নিচ্ছেন। গত সোমবার সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠকে বসেন রাষ্ট্রপতি।

এ সংলাপে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও দলটির পক্ষ থেকে সংলাপে না যাওয়ার বিষয়ে বক্তব্যে উঠে আসছে। যদিও বিএনপি থেকে দাবি করা হচ্ছে আগামী নির্বাচনকালীন আলোচনার দরজা ওপেন হলে বিএনপি তাতে সায় দিবে। এ ছাড়া এই জাতীয় সংলাপকে সরকারের নাটক হিসেবে দেখছেন নেতারা।

গত পরশু রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিএনপির প্রথম সারির প্রায় সব নেতাই সংলাপের বিপক্ষে বলেছেন। তারা বলছেন, সংলাপের নামে বঙ্গভবনে নতুন নাটকের মঞ্চায়ন হচ্ছে। সার্চ কমিটির নামে নির্বাচন কমিশন গঠনে তামাশা শুরু হয়েছে। এ তামাশা ও প্রতারণায় যারা থাকবে তারা দেশ এবং গণতন্ত্রের শত্রু। সংলাপে গিয়ে যে সময় নষ্ট হবে সেটা সরকার তাড়ানোর কাজে লাগাতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে অন্যায় এবং বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। এর অর্থ হলো আওয়ামী লীগ আজকে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিতে পরিণত হয়েছে। কারণ দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এ দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে তিনি সেদিন তার দুই শিশুর হাত ধরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে তিনি ক্যান্টনমেন্টের কারাগারে বন্দি ছিলেন। আজ তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।

দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আজকে দেখুন এই ৫০ বছরে এরা (সরকার) দাবি করে যে, বাংলাদেশে উন্নয়নের নাকি বন্যা বইয়ে দিয়েছে। এই ৫০ বছরে আজকে গরিব আরো গরিব হয়েছে। এখানে কিছু সংখ্যক আওয়ামী লীগের সহায়তাপুষ্ট, মদদপুষ্ট লোক আরো ধনী হয়েছে। আজকে দেশের কৃষকরা পণ্যের দাম পাচ্ছে না, শ্রমিকরা তাদের শ্রমের ন্যায্য পাওনা মজুরি পাচ্ছে না। আমাদের সব রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। আমাদের অর্থনীতি সত্যিকার অর্থে একটা পরনির্ভরশীল অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। আমাদের সামনে সময় নেই। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব রাজনৈতিক শক্তি, ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে ভয়াবহ দানবীয় যে শক্তি আমাদের বুকের ওপর চেপে বসে আছে তাদের পরাজিত করে সত্যিকার অর্থে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

নতুন ইসি গঠন বিষয়ে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আগামী নির্বাচন নিজেদের আয়ত্ত করার জন্য সরকার এখন থেকেই নীল নকশা করে এগিয়ে যাচ্ছে। আমি মনে করি, ইসি গঠন নিয়ে সরকারের নয়া সংলাপও একটি নাটক। নাটকের প্রথম মঞ্চায়ন হলো- সরকারের লোকজন সবার কথা শুধু শুনবে কিন্তু করবে সরকারের নিজেরটা। তাই সার্চ কমিটি গঠন বা রাজনৈতিক সংলাপ সবই তামাশায় ঠাসা।

বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে গিয়ে যে সময়টা নষ্ট করব, সে সময়টা সরকার তাড়ানোর কাজে লাগাতে হবে। এসব তামাশায় অংশগ্রহণের প্রশ্নই ওঠে না। আমরা জানি ওনারা লোক দেখানো কাজ করে করে ওস্তাদ হয়ে গেছে। তাদের পালে হাওয়া লাগানোর জন্য সংলাপে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনে তামাশা শুরু হয়েছে। এ তামাশা এবং প্রতারণায় যারা থাকবে তারা হচ্ছে বাংলাদেশ ও গণতন্ত্রের শত্রু।

সংবাদ প্রতিদিন বিডি / ইকবাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *