সংবাদ প্রতিদিন বিডি

সংবাদ প্রতিদিন বিডি

গাজীপুরে চালক হত্যা করে পিকআপ ছিনতাই চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

1 min read

গাজীপুরে মালামাল নেওয়ার কথা বলে ভাড়া করা পিকআপচালককে হত্যা করে ডাকাতি করা ডাকাত চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)। আজ রোববার জিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (অপরাধ) রেজওয়ান আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।

রেজওয়ান আহমেদ জানান, গ্রেপ্তারকৃত আন্তজেলা ডাকাতদলের এ সদস্যদের গাজীপুর ও হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় সাতটি পিকআপ তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করে জব্দ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত ডাকাতরা হলেন হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার দৌলতপুর এলাকার মারুফ হোসেন (৩০) ও চারিগাঁও এলাকার আব্দুল আহাদ (৩৪), ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার সানন্দখীলা এলাকার এনামুল (২২), শেরপুরের সদর উপজেলার টিকারচর এলাকার আমিনুল (২৪) ও  টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার খড়রিয়া এলাকার শামীম (২৪)। আহাদ বাদে অন্যরা সবাই গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।

জিএমপির এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, গত ১ সেপ্টেম্বর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বাসন থানাধীন বারবৈকা মধ্যপাড়া রাস্তার পাশে জাকিরের বাগানের ভেতর থেকে গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় অজ্ঞাত পরিচয় একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ব্যাপারে ওই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তফা কামাল বাদী মামলা করেন। পরের দিন নিহত ব্যক্তির লাশ শনাক্ত করেন তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার।

জানা যায়, নিহত ব্যক্তির নাম সেলিম সরদার (৩৩)। তিনি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পশ্চিম উদয়নগর এলাকার শাহ জামাল সরদারের ছেলে। তিনি গাজীপুর সদর উপজেলার বেগমপুর (ফুয়াং গেট) এলাকায় সপরিবারে ভাড়ায় থাকতেন।

নিহত সেলিম সরদার গত ৩১ আগস্ট নিজের পিকআপ নিয়ে বাসা থেকে বের হন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে সেলিম মোবাইল ফোনে স্ত্রীকে জানান, সবজি কিনে বাসায় ফিরছেন। কিন্তু রাতে তিনি আর বাসায় ফিরেননি। মামলা দায়ের এবং পরিচয় শনাক্তের পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জিএমপির বাসন ও সদর থানা পুলিশ যৌথভাবে আজ রোববার ভোর পর্যন্ত গাজীপুর ও হবিগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযানে চালিয়ে ওই পাঁচ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ওই পিকআপসহ গাজীপুর ও আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন সময় ডাকাতি করা মোট সাতটি পিকআপ উদ্ধার করে তা জব্দ করে।

প্রাথমিকভাবে আসামিরা ওই হত্যাকাণ্ডসহ আরো পিকআপ ডাকাতিতে জড়িত থাকার ঘটনা স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা আন্তজেলা গাড়ি ডাকাতদলের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তারা মালামাল নেওয়ার কথা বলে রাতে বিভিন্ন এলাকা থেকে গাড়ি ভাড়া করে। পরে তারা চালক ও হেলপারকে খুন করে বা মারধর করে ভাড়া নেওয়া গাড়ি ডাকাতি করে নিয়ে যায়।

রেজওয়ান আহমেদ আরও বলেন, গত ৩১ আগস্ট রাত ১১দিকে মহানগরীর ভোগরা বাইপাস মোড় থেকে বোরহান ও মারুফ এক হাজার ৩০০ টাকায় মাওনা যাওয়ার জন্য সেলিমের পিকআপ ভাড়া করেন। তারা ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহৃত মিক্সার মেশিন নেওয়ার কথা বলে কৌশলে সেলিমকে বাসন থানাধীন শাহ আলম বাড়ী এলাকার ঘটনাস্থলে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই ওত পেতে থাকা আমিনুল, এনামুল ও শামীমের সহযোগিতায় সেলিমকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করেন। পরে লাশের হাত-পা বেঁধে ঘটনাস্থলে ফেলে সেলিমের পিকআপটি নিয়ে পালিয়ে যান তারা। মারুফ একা পিকআপটি চালিয়ে আশুগঞ্জে গিয়ে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে সহযোগী আহাদের কাছে হস্তান্তর করেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা জানিয়েছেন।

জিএমপির (অপরাধ) উত্তর বিভাগের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে জিএমপির সদর জোনের সহকারী কমিশনার রিপন চন্দ্র সরকার, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম, বাসন থানার ওসি মালেক খসরু খান ও পরিদর্শক (তদন্ত) জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *