সংবাদ প্রতিদিন বিডি

সংবাদ প্রতিদিন বিডি

ফেনীতে জিপার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বন্ধের পথে

1 min read

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশে উন্নত মানের জিপার উৎপাদন করে অল্প সময়ে সুনাম অর্জন করেছিলো এইছ এম জিপার কোম্পানি । ২৪ ঘন্টায় ৩ সিফটে ৫০ কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করতেন। প্রতিষ্ঠানটি মানসম্পন্ন জিপার উৎপাদনে অনেক সুনাম অর্জন করেছিলো । করোনার কারণে বর্তমানে ৫০ স্থলে মাত্র ৫থেকে ১০ জন শ্রমিক নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি নিভু নিভু করছে। চাকরি হারিয়ে অনেকেই বেকার হয়ে পড়ে পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন যাপন করছে। করোনার কারণে যে কোনো সময়ে সম্ভাবনাময় এই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হওয়ার পথে।

জানা গেছে, ফেনী সদর উপজেলার কোর্ট বিল্ডিং এর থেকে সামান্য দূরে মহাসড়কের পাশে মুলিসা ঘাটা এলাকায় ২০১৭ সালের শেষের দিকে গড়ে উঠে মেটাল জিপার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এইছ এম জিপার কোম্পানি। কোয়ালিটি জিপার তৈরি করে অল্প সময়ে সুনাম অর্জন করে প্রতিষ্ঠানটি। গুনগত মানে সরকার কর্তৃক স্বীকৃতি পায়।

কোয়ালিটি জিপার তৈরী করে দেশের বাজারে বেশ আলোড়ন তৈরী হয়। কোয়ালিটি মেটাল জিপার প্রস্তুতকারক হিসেবে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ২৪ ঘন্টায় ৩ সিফটে ১০০ শ্রমিক কাজ করতেন। করোনার আগে প্রতিদিন ৩০০০০ হাজার জিপার উৎপাদন হত,বর্তমানে ২০০০ হাজার জিপার উৎপাদন হচ্ছে। এলাকার লোকজন চাকরি পেয়ে বেশ খুশি হয়েছিলো। কারখানায় এক সময় শ্রমিকদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে থাকতো।

এভাবে প্রতিষ্ঠানটি তিন বছর সুনামের সাথে চলে। করোনার কারণে লকডাউন-দোকান-পাঠ বন্ধ এবং সরকারি বিধি নিষেধের কারনে ৫০ শ্রমিকের স্থলে এখন মাত্র ৫ থেকে ১০ জন শ্রমিক নিয়ে কোনো মতো প্রতিষ্ঠানটি চালু রয়েছে। প্রতিষ্ঠান চালাতে অর্থ সংকটে পড়েছেন মালিক ও ব্যাবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমান বাদল । করোনার কারণে অনেকে চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছেন। তারা এখন পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন যাপন করছেন।বর্তমানে কারখানা জুড়ে সুনসান নিরবতা। যে কোনো সময় অর্থ সংকটের কারণে কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এমনটি জানিয়েছেন কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার ( জি এম ) ফারুক আহমেদ।

প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমান বাদল বলেন, বিভিন্ন নামকরা রপ্তানিকারক পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকদের পরামর্শে ও দেশের জন্য কিছু করার লালিত স্বপ্ন থেকে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলি। ৫০ লোকের কর্মসংস্থান হয়, ভবিষ্যতে ৫০০ লোক কাজ করবে বলেও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। যে ভাবে দ্রুত গতিতে এইছ এম জিপার কোম্পানি এগিয়ে যাচ্ছিলো কিন্ত হঠাৎ করেই বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে এই প্রতিষ্ঠানটি এখন অর্থ সংকটে পড়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। তিনি সরকারি সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

তিনি বলেন, এত শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রণোদনা পেলো অথচ আমি কয়েক দফায় আবেদন করেও পেলাম না। প্রণোদনার নামে শুধুই ব্যাংকের টালবাহানা। তা হলে প্রণোদনা কে পাচ্ছে বলেও তিনি প্রশ্ন তুলেন।

তিনি আরো বলেন,যারা প্রণোদনা পাওয়ার যোগ্য, তারা প্রণোদনা পাচ্ছেন না। পাচ্ছে অযোগ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। অনেকে প্রণোদনার টাকা নিয়ে বাড়ি-গাড়ি করেছেন।

হাবিবুর রহমান বাদল বলেন, লক্ষ লক্ষ টাকা মার্কেটে পড়ে আছে। লকডাউনের কারণে দোকান-পাঠ বন্ধ থাকায় তা উঠছে না। ইকবাল নামক এক বন্ধুর কাছ থেকে বিশ লক্ষ টাকা ধার দেনা করে চালাতে হচ্ছে। সবাই টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। করোনা চলে গেলে এই দুঃসময় থাকবে না। আবারো উঠে দাঁড়াতে পারবো বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান দিয়ে দেশের বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠানে রুপ নেয় এবং এই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়। সরকার এই করোনাকালে ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে বাঁচিয়ে রাখবে এমনটি মনে করেন শিল্পের সাথে জড়িত বিশিষ্ঠ ব্যক্তিরা। তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে বলে তারা মনে করেন।

সংবাদ প্রতিদিন বিডি/ লিয়াকত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *